কলমে- অগ্নিষা খামরুই
(১) দক্ষিণ কলকাতার এক নামী চিকিৎসাকেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল নিবেদিতা । সৌরিশ এখনো এসে পৌঁছায়নি । সন্ধ্যে ছটায় স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ অনীশ সেনগুপ্তর সঙ্গে ওদের সাক্ষাতের সময় নির্ধারিত । বিয়ের পর দুজনেই চাকরির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ছুটতে গিয়ে সময় পেরিয়েছে অনেকটাই । যখন খেয়াল হয়েছে সংসারে থিতু হবার কথা, নতুন একজনকে ওদের মাঝে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে বেশ কয়েকবার । অতএব বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন । বেশ কিছু শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর বোঝা গেছে স্বাভাবিক উপায়ে আর মা হতে পারবে না নিবেদিতা । তাই কৃত্রিম উপায়ে পরীক্ষাগারে জন্মের সূচনা হবে ভ্রূণের । কয়েকটা মাত্র কোষ জরায়ুতে প্রতিস্থাপনের পর নিবেদিতার গর্ভে বেড়ে উঠবে সে । ইদানীং তাই বেশ কিছু মাস ধরে ওষুধ, ইঞ্জেকশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ও । মাঝে মাঝে হতাশা এসে তবু ভিড় করে … আর তখনি সেই প্রথমবার দেখা সাদা কালো ছবির ভিতর কালো কোট পরিহিত হাস্যময় এক মুখ এসে উদয় হয় চোখের সামনে । যার গল্প ও প্রতিবার এখানে এসেই একটু একটু করে শোনে ।
মা এই যে দেখছ ছবিতে , ইনি সুভাষ মুখোপাধ্যায় । আমাদের সবার শিক্ষক । এই বলেই সম্বোধন করেছিলেন নিবেদিতার প্রৌঢ় ডাক্তার বাবু ।
সুভাষ মুখোপাধ্যায় – ভারতবর্ষ তথা এশিয়ার প্রথম টেস্ট টিউব বেবি বা আই ভি এফ (ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) এর জনক – অকালে হারিয়ে যাওয়া কৃতী বঙ্গসন্তান । ১৬ই জানুয়ারি ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন বিহারের হাজারিবাগ (বর্তমানে ঝাড়খণ্ডের অন্তর্গত ) শহরে জন্ম হয়েছিল তাঁর । ছাত্রজীবন কেটেছিল প্রথমে স্কটিশ চার্চ কলেজে । পরবর্তী পর্যায়ে ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ থেকে । ওই বছরেই শারীরবিদ্যা বিষয়ে সান্মানিক স্নাতক হন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে । ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে প্রথম পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন প্রজনন শারীরবিদ্যা (অর্থাৎ রিপ্রোডাকটিভ ফিজিওলজি) বিষয়ে রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ থেকে । এরপর এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লিউটিনাইজিং হরমোন পরিমাপের নতুন পদ্ধতি আবিস্কার করে দ্বিতীয়বার পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে । এরপরের কিছু বছর শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নিয়ে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজের শারীরবিদ্যা বিভাগে দিব্যি দিন কাটছিল তাঁর ।
সারাবিশ্বের বিভিন্ন পরীক্ষাগারে তখন নলজাতক নিয়ে গবেষণা চলছে জোরকদমে । ডাঃ মুখোপাধ্যায়ের কাছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি বা আদর্শ পরীক্ষাগার – কোনোটাই নেই । যেটুকু ছিল তা মেধা এবং নতুন কিছু আবিষ্কারের জন্যে অদম্য জেদ । দুই সহকারী হিসেবে পেলেন ডাঃ সুনিত মুখার্জি ( ক্রায়োবায়োলজিস্ট – যিনি নিম্ন তাপমাত্রায় বিভিন্ন কোষ সংরক্ষক হিসেবে পারদর্শী ) এবং স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ সরোজ কান্তি ভট্টাচার্য্যকে । তাদের সহযোগিতায় অপ্রতুল ব্যবস্থাপনা থাকা সত্ত্বেও আশার আলো দেখতে শুরু করেছিলেন ধীরে ধীরে । কিন্তু সঠিক পথে এগোনো হল কিনা তারজন্যে তো প্রমান চাই । ফলাফল না পেলে কি করেই বা জনসমক্ষে আনবেন সেই নতুন গবেষণার তথ্য ! বন্ধুসূত্রে পরিচয় হল বনেদি মাড়োয়ারি পরিবারের আগরওয়াল দম্পতির সঙ্গে । সন্তানহীন মা বাবার বিবাহের পর অতিক্রান্ত হয়েছে সুদীর্ঘ বারো বছর । আনকোরা পদ্ধতিতে সাফল্যের অনিশ্চয়তা জানলেও অসহায় দম্পতি নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে রাজি হয়েছিলেন সেই প্রস্তাবে ।
অক্টোবর ৩, ১৯৭৮ , দুর্গাপুজোর ঠিক আগে সাফল্য এসে ছুঁয়ে দিল ডাঃ মুখোপাধ্যায়ের কাছে । জন্ম নিল দুর্গা ওরফে কানুপ্রিয়া আগরওয়াল । ভারত তথা এশিয়ার প্রথম এবং বিশ্বের দ্বিতীয় নলজাতক সন্তান । যার জনক এক বঙ্গ সন্তান । প্রথম নলজাতক লুইস ব্রাউন অবশ্য মাত্র ৬৭ দিন আগে জন্ম নিয়েছে ইংল্যান্ডে । সেখানকার আধুনিক সরঞ্জামের বিপরীতে কলকাতায় এক সাধারণ রেফ্রিজারেটর , অপরিসর গবেষণাগার , স্বল্প লোকবলের সাহায্যে যে যুগান্তকারী আবিষ্কার – দ্বিতীয় হলেও কি তাঁর কৃতীত্ব কোনো অংশে কম ? এবার সে গবেষণা প্রকাশ্যে আনার কথা ভাবলেন ডাঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায় । সম্পূর্ণ গবেষণাপত্র পাঠিয়ে দিলেন আন্তর্জাতিক হরমোন স্টেরয়েড কংগ্রেস (নতুন দিল্লী) ও ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ ক্রায়োজেনিক্সের দরবারে । তখন তোলপাড় পড়ে গেলো সংবাদমাধ্যমে । হিমায়িত মানব ভ্রূণ থেকে সৃষ্ট নলজাতকের জনকের অবমাননা শুরু ঠিক এই পর্যায় থেকে …
কোথায় যেন হারিয়ে গেলো তাঁর যোগ্য সম্মান !! এর পরিবর্তে কর্মক্ষেত্র থেকে শুরু করে সমাজেও একপ্রকার একঘরে করে দেওয়া হল তাঁকে । অপরাধের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে চললো একের পর এক বিচারসভা । কেন তৎকালীন রাজ্য সরকারের জানার আগে সংবাদমাধ্যম আগে জেনে গেলো এই তথ্য ? অভিযোগের তির ছুঁড়ে তাঁর আবিষ্কারকে একপ্রকার মিথ্যে বলে দাবি করলেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা । পেশায় তাঁরাও চিকিৎসক, কিন্তু আইভিএফ পদ্ধতি সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না তাদের । সাহায্য করতে চেয়েও পারিপার্শ্বিক চাপে পড়ে তাঁর সহকারীরা এগিয়ে আসতে পারেননি । পারিবারিক সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখার জন্যে চুপ থাকেন আগরওয়াল দম্পতিও । নানাস্তর থেকে একের পর এক বাধা পেয়ে তখন হৃদয় বিদারিত সৃষ্টিকারকের । জাপানের আন্তর্জাতিক এক সন্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার ডাক এলেও যেতে পারলেন না তিনি, কেড়ে নেওয়া হয়েছিল পাসপোর্ট ।
সেইসময় প্রচ্ছন্ন মদতে তাঁকে বদলি করা হল সুদূর বাঁকুড়া সন্মিলনী মেডিকেল কলেজে । হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় এরপর কলকাতা আর জি কর মেডিকেল কলেজে ফিরিয়ে আনা হল তাঁকে । বিজ্ঞান গবেষণায় নিবেদিতপ্রাণ স্রষ্টার কাছ থেকে গবেষণার সকল সুযোগ কেড়ে নিতে পুনরায় ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে তাঁকে বদলি করা হল কলকাতার রিজিওনাল ইন্সিটিউট অফ অপথ্যালমোলজিতে । অনেক যুদ্ধের পর এবার হতাশা এসে গ্রাস করলো তাঁকে । যাবতীয় অপমান , অভিযোগের উর্দ্ধে গিয়ে শেষপর্যন্ত থেমে গেল তাঁর জীবনরথ । ১৯৮১ এর ১৯শে জুন সহধর্মিণী নমিতা মুখোপাধ্যায় কর্মক্ষেত্র থেকে বাড়ি ফিরে দেখলেন সব গবেষণাকে ছুটি দিয়ে চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন তাঁর জীবনসঙ্গী । কাগজে লিখে গেছেন যন্ত্রণাময় কয়েকটি শব্দ, যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায় –“হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর জন্যে আমি প্রতিদিন অপেক্ষা করতে পারলাম না।“ এই ঘটনার পর নমিতাদেবী পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে বাকি জীবন শয্যাশায়ী হয়ে কাটান ।
তাঁর গল্প এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারতো । কিন্তু হল না কারণ একজন সহৃদয় চিকিৎসক , ডাঃ টি সি আনন্দ কুমারের প্রবেশ ঘটলো এই চিত্রনাট্যে । ডাঃ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পাঁচ বছর পর ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই আগস্ট ভারতের প্রথম নলজাতক ‘হর্ষ’ এর জন্মদাতা বলে প্রকাশ পেয়েছিলেন তিনি এবং ডাঃ ইন্দিরা হিন্দুজা । হঠাৎই জাতীয় বিজ্ঞান অধিবেশন উপলক্ষ্যে ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় আসার পর তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ হল ডাঃ মুখোপাধ্যায়ের তৎকালীন সহকারীর সঙ্গে । সমস্ত গবেষণার কাগজ এবং ডায়েরী পড়ে তিনি বুঝতে পারেন আসলে তিনি ডাঃ মুখোপাধ্যায়ের উত্তরসূরি । তিনি নলজাতকের স্রষ্টা হিসেবে সমাদর পেলেও মূল কারিগর নিদারুণ যন্ত্রণা পেয়ে হারিয়ে গেছেন বহু আগে । এবার তাঁকে স্বীকৃতি দেবার পালা । সারা বিশ্বের কাছে জানানোর দায়িত্বের ভার নিলেন ডাঃ টি সি আনন্দ কুমার । দেখা করলেন দুর্গার পরিবারের সঙ্গে । কানুপ্রিয়া আগরওয়ালের তখন পদবি বদলেছে বিবাহের পর । জন্মদাতা বিজ্ঞানীকে সম্মান ফিরিয়ে দিতে এবার বদ্ধপরিকর তিনি ।
সকল নথি খতিয়ে দেখে আইসিএমআর এর প্রজনন বিদ্যা বিভাগে সেগুলি পাঠালেন ডাঃ টি সি আনন্দ কুমার । যে সরল পদ্ধতি অনুসরণের দ্বারা সাফল্যের সঙ্গে জন্ম নিয়েছিল দুর্গা, সেটাই বর্তমানে ব্যবহৃত হয় সারাবিশ্বে । দুর্ভাগ্য এটাই যে রাজনৈতিক জাঁতাকলে পড়ে হারিয়ে যেতে হয়েছিল তাঁর আবিষ্কারক কে । যে গবেষণা মিথ্যে বলে জনসমক্ষে হেনস্থা করা হয়েছিল স্রষ্টাকে, ডাঃ আনন্দের হাত ধরে ভারত তথা বিশ্বের সকল আন্তর্জাতিক ক্ষেত্র মানতে বাধ্য হল তার সত্যতা । সেই দিনটিও ছিল দুর্গার ২৫ তম জন্মদিন …ভারতবর্ষের আইভিএফ পদ্ধতির সাফল্যের পঁচিশ বছর ।
২০১০ খ্রিস্টাব্দ, সারা পৃথিবীর ১০০ টি দেশের ১১০০ জন চিকিৎসাবিজ্ঞানীর আবিষ্কার লিপিবদ্ধ করে প্রকাশিত হল ‘দ্য ডিকশনারি অফ মেডিকেল বায়োগ্রাফি’ । সেই বইতে স্বর্ণাক্ষরে লেখা যে তিনটি নাম ছিল কলকাতা থেকে , তাঁরা হলেন – উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী , স্যর রোনাল্ড রস এবং ডাঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায় । সেই বছরেই প্রথম নলজাতকের জনক হিসেবে চিকিৎসাক্ষেত্রে নোবেল পুরস্কার পেলেন ডাঃ রবার্ট এডওয়ার্ডস । কে বলতে পারে এই পুরস্কারের সঙ্গী হিসেবে একজন বাঙালি বিজ্ঞানীর নাম জুড়ে থাকতো না !
তাঁকে নিয়ে লেখা রমাপদ চৌধুরীর উপন্যাস ‘অভিমন্যু’ । যার উপর ভিত্তি করে চিত্রপরিচালক তপন সিনহা নির্মিত করেন ‘এক ডক্টর কি মওত’ ।
বঞ্চনার ভার কমাতেই হয়তো বর্তমান কালে কলকাতায় গড়ে উঠেছে ‘ডাঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায় মেমোরিয়াল রিপ্রোডাকটিভ বায়োলজি রিসার্চ সেন্টার’ । মৃত্যুর ৪০ বছর পর তাঁর কর্মক্ষেত্র নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসের নামকরণ হয়েছে মহান এই বিজ্ঞানীর নামে , আবক্ষ মূর্তি বসেছে সেখানে । যে ঘরে তিনি গবেষণায় রত থাকতেন তার বাইরে লাগানো হয়েছে স্মৃতিফলক । এছাড়াও তাঁর মূর্তি স্থাপন হয়েছে সুদূর হাজারিবাগ শহরে । দাবি উঠেছে তাঁকে যোগ্য সন্মান দেওয়ার … কিন্তু যে যন্ত্রণা বুকে নিয়ে তিনি হারিয়ে গেছিলেন পরপারে, সেই ক্ষতর উপর প্রলেপ দেওয়ার সাধ্য আমাদের কারোর নেই ।
(৩)
বছর শেষ হতে বাকি আর মাত্র কয়েকটা দিন । নিবেদিতা আর সৌরিশের কোল আলো করে এসেছে এক নবজাতিকা । বহুদিনের অপেক্ষার পর মা হবার অনুভূতি নিবেদিতার কাছে ভাষাহীন । ক্লান্তি, শারীরিক কষ্ট এসব ফিকে । বুকের ওমে তাকে জড়িয়ে নিয়ে কত স্বপ্ন আঁকিবুঁকি কেটেছে মনের গহীনে । বারবার সেই সাদাকালো ছবির অবয়ব ফিরে এসেছে চোখের সামনে । মনে মনে তাই ভেবে রেখেছে একটা নাম , ‘সুভাষিণী’ । ওর আদরের সন্তানের নামের সঙ্গে আজীবন সেই স্বপ্নের কাণ্ডারী বেঁচে থাকবে। এটুকুই তো দিতে পারে সে …
‘ভুলে যাওয়া বাঙালি’ এই শিরোণামে প্রতি বুধবার ও রবিবার আমাদের ওয়েবসাইট www.saptarshinag.in এ প্রকাশিত হবে একটি করে অধ্যায় | আর সেই লেখা হবে তোমাদের | বাংলার এমন কৃতি সন্তানরা যাঁদের আজ মানুষ ভুলে গেছে তাঁদের নিয়ে গবেষনামূলক লেখার সিরিজ এটি | লিখতে হবে বাংলায় | সেরা লেখাগুলো স্থান পেতে পারে kindle এ প্রকাশিত বইয়ে | তাই চটপট পাঠিয়ে দাও নিজের লেখা nagsaptarshi@gmail.com এই মেইল আইডি তে | ওয়ার্ড ফাইল এ শুধুমাত্র পাঠানো যাবে লেখা | লেখার গুণমান বিচার করে শুধুমাত্র ভালো লেখাই কিন্তু প্রকাশ পাবে | শব্দের কোনো সীমারেখা নেই | লেখা পাঠানোর ও ডেডলাইন নেই | এই সিরিজকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব ও তোমাদের |